একটি ধর্ষণের গল্প ভিডিও


আজকে একটি ধর্ষণের গল্প বলি। হ্যাঁ, এটিও প্রতিদিনের পেপারে উঠে আসা অসংখ্য ধর্ষণের ঘটনার একটি, পার্থক্য এইটুকুই যে ঘটনাটা আমি মোটামটি কাছ থেকেই ঘটতে দেখেছিলাম।

এই গল্পটি রবির মা, রবির বাবা আর রবির। রবিরা ছিল নিম্নবিত্ত, তথাকথিত সমাজের একদম শেষ পর্যায়ের মানুষ। সাঁওতাল এই পরিবারটিতে রবির বাবা ছিলেন একজন রিকশাচালক। উনাদের আসল নাম পরিচয় আমি জানিনা, শুধু জানতাম উনারা রবির বাবা আর মা।

প্রায় বছর নয়েক আগে রাজশাহীতে আমাদের বাড়ির দুই ঘর পাশে যে পরিত্যক্ত বাড়িটি ছিল, একদিন কলেজ যাবার পথে খেয়াল করলাম সেখানে রবিরা এসে উঠেছে। বাড়ির আশে পাশে আরও অনেক রিকশাওয়ালা দম্পত্তির বসবাস ছিল। তবুও হাসিখুশি এই দম্পতিটি আমার নজর কেড়েছিল, তার কারন ছিল রবির বাবার অসম্ভব প্রাণোচ্ছল স্বভাব আর রবির বাবা আর মায়ের গভীর প্রেম। সমাজের নিচু তলার মানুষদের মধ্যে সাধারনত প্রেম ভালবাসার চর্চা সেভাবে দেখা যায়না। সেখানে উনারা ছিলেন পুরাই দৃষ্টান্ত। আমি আমার কলেজ যাওয়া আসা, দৈনন্দিন জীবন যাপনের মধ্যে উনাদের গভীরভাবে লক্ষ্য করতাম। রবির বাবা প্রায় সময় সন্ধ্যার দিকে রবির মা আর রবিকে নিয়ে রিকশাতে করে ঘুরতে বের হত, সারাদিন রিকশা চালালেও বিকালের পরে সব সময় রবির বাবা বাসায় থাকত।

অনেক সকালে প্রাইভেটে যাবার সময় প্রায়দিনই আমি উনার রিকশাতে যেতাম, সেই সুবাদে উনার সাথে মাঝে মাঝেই আমার টুকটাক কথা বার্তা হত। উনি মাঝে মাঝেই আমাকে গল্প শুনাতেন আজ অমুক হলে কোন বাংলা সিনেমা এসেছে, আজ বিকেলে সেখানে যাবে তারা সবাই তো কাল চিড়িয়াখানায় যাবে, রবির মায়ের জন্য ঈদে কি কিনবেন এইসব টুকিটাকি গল্প আর কি। উনাদের এই ধরনের গল্প শুনতে আমারও খুব ভালো লাগত।

তুলনামূলক ভাবে রবির মা মানুষটা কিছুটা লাজুক ছিলেন, কখনও হয়ত কল পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকলে দেখা হত, কুশল জানতে চাইলে লাজুক হাসি দিতেন। রবির মায়ের আরেকটি স্বভাব ছিল, উনি খুব গুছিয়ে পরিপাটি হয়ে থাকতেন। মাঝে মাঝে আবার দেখতাম বিকেল বেলায় আমাদের বাড়ির সামনের পুকুরপাড়ে দুই জন বসে টুক টুক চা খাচ্ছেন আর ছোট্ট রবি খেলে বেড়াচ্ছে। সব মিলিয়ে কিন্তু খুব চমৎকার সুখী পরিবার। আমার বাসার একদম নিকটবর্তী হবার কারনে হাজার ব্যাস্ততার মাঝেও তাদের কাজকর্ম ঠিকই চোখে পড়ত।

ক্রমে ক্রমে দেখলাম রবির বাবার আমুদে স্বভাবের জন্য প্রায় দিন পাড়ার অন্য ৩/৪ জন রিকশাচালক উনাদের বাসায় যাওয়া শুরু করল, মাঝে মাঝে গভীর রাত পর্যন্ত আড্ডা চলত। এভাবেই দিন চলছিল। হঠাৎ একদিন ঘুম থেকে উঠে শুনতে পেলাম পাশের বাসায় নাকি পুলিশ এসেছে। ঘটনা জানতে গিয়ে আমি প্রচণ্ড মানসিক আঘাত পেয়েছিলাম। গভীর রাতে রবির বাবার সেই ৩ জন রিকশাওয়ালা বন্ধুর সাথে আরও ৩জন মোট ৬জন মিলে রবির বাবা কে পাশের ঘরে বেঁধে রেখে রবির মাকে রাতভোর ধর্ষণ করেছে। একঘরে যখন রবির মায়ের উপর নৃশংস অত্যাচার চলছিল তখন ভোরের দিকে রবির বাবা কোনমতে পাশের ঘর থেকে পালিয়ে গিয়ে লোকজন ডেকে আনে। সবাই মিলে দুই জনকে হাতে নাতে ধরে ফেললেও বাকিরা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ এসে রবির মায়ের রক্তাক্ত শরীর হাসপাতালে নিয়ে যায়।

এর পরের ঘটনা ছিল আসলে আর বাকি সব ধর্ষণের ঘটনার মতই। রবির মাকে হাসপাতালে ভর্তি করা, পুলিশের গ্রেফতার, বাকিদের পলায়ন। এর পরেও রবির বাবাকে আমি কয়েকদিন দেখেছিলাম, ভেঙে পড়া বিধ্বস্ত এক মূর্তি যেন। রবির মা হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাবার আগেই তারা এলাকা ছেড়ে চলে যায়।

পাড়ায় থাকবেই বা কিভাবে? ধর্ষণের পর পরেই তো সব দোষ এসে পড়েছিল রবির মায়ের উপর। অপরাধীদের বউ, ছেলে মেয়ে পাড়া প্রতিবেশীরা সবাই গলা উঁচিয়ে বলা শুরু করল সব দোষ রবির মায়ের ! সে কেন সব সময় এত সেজে গুঁজে থাকবে? গরিব মানুষের কেন এত গুছিয়ে শাড়ি পড়ার সখ? কেন স্বামীর সাথে এত ঢং করে বেড়াবে? রবির মায়ের আসলে চরিত্র খারাপ, সে নাকি ভাড়া খাটে। ফাঁকতালে তার নষ্ট চরিত্র(!?) দিয়ে পাড়ার সেই বেচারি(?!) ৩জন রিকশাওালাকে ফাঁসিয়েছে। আর সেই বেচারি তিনজন(?!) কিছু না বুঝেই নিজেদের পাশবিক কামনা মেটাতে স্বামীকে বেঁধে রেখে রাতভোর ৬জন মিলে সেই অসহায় নারীটিকে সাংঘাতিক নির্যাতনের পরে ধর্ষিত করে রক্তাক্ত, ক্ষত বিক্ষত করেছে।

একটি মেয়ের একটু গুছিয়ে শাড়ি পরে সেজে গুঁজে স্বামীর সাথে বেড়াতে যাওয়াও তবে দোষের!!! তাতেই তার চরিত্র নিয়ে মানুষের অশ্লীল নোংরা ইঙ্গিত?? সেই রবির মা কোথাও কারো এতটুকু সহানুভূতি পায়নি সেদিন, অথচ যদি তাদের বাসায় চোর এসে একটি পাতিলও চুরি করে নিয়ে যেত আমি নিশ্চিত সবাই সেই পরিবারটির পাশে গিয়ে দাঁড়াত সেদিন।

সেই ধর্ষণের ঘটনাটি সেই সময়ে পেপারে এসেছিল, বেশ কিছুদিন পাড়া সরগরম করে রেখেছিল, একজন পলাতক থাকলেও ঘটনার আসামী বাকি সেই দুই জনের ৮ বছরের করে জেল হয়েছিল। কয়দিন আগে শুনলাম জেল থেকে তারা ছাড়া পেয়েছে। সেই সহজ সরল বেচারি রিকশাওয়ালারা(?!) জেল থেকে বেড়িয়ে তাদের বউদের সাথে আবার সংসারও শুরু করেছে। শুধু মাত্র ছেলে হবার কারনে এত বড় অপরাধের পরেও সমাজে অন্য সবার সাথে মিশে যেতে এই অপরাধীদের একটুও সময় লাগেনি। ধর্ষক নামের এই জঘন্য অপরাধীর তকমাটা তাদের শরীরের কোথাও লাগেনি, অথচ নির্যাতিত সেই মেয়েটিকে, তার স্বামীকে, তার পরিবারকে এলাকা ছাড়তে হয়েছে। ধর্ষকরা আজ বেশ ভালোই আছে, সুখেই আছে। খুব জানতে ইচ্ছে হয়, রবিরা আজ কেমন আছে??? এখনও কি তাদের সংসারে হাজার অভাবের মাঝেও সুখ আনাচ কানাচ দিয়ে ঝরে পড়ে??? এখনও কি তাদের সেই হাসিখুশি ভাবটা আশে পাশের সবাইকে হাসিয়ে ফেলে?

এ তো গেল সমাজের নিম্নবিত্ত মানুষজনের মন মানসিকতা যেখানে ধর্ষণের পরে সবাই মেয়েটির দোষ খোঁজে। ভয়ংকর ব্যাপার হল আমরা যারা তথাকতিত শিক্ষায় শিক্ষিত মানুষজন তাদেরও ঠিক একই অবস্থা।
দিল্লীর সেই মেয়েটির অসম্ভব মর্মান্তিক ঘটনার পরে সবাই বেশ নড়ে চড়ে বসেছে। নানান মানুষ নানান রকম কথাবার্তা বলা শুরু করেছে। ফেসবুকের একটা সুবিধা হল মানুষ জনের চিন্তা ভাবনাগুলো এখন কিছুটা হলেও বুঝা যায় ফেসবুকের কল্যাণে।

ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেখলাম যেটি অনেকেই তুমুল হারে লাইক আর শেয়ার করছে সেটি ছিল- "Do not teach us what to wear, teach your sons not to rape" এই কথাটির এবং প্ল্যাকার্ডটির প্রেক্ষিতে করা মন্তব্য-

    মিস্টির দোকানে মিস্টি ঢেকে না রাখলে তাতে মাছি বসবেই.................................।।

    এখন যদি দোকানদার দোকানের কাস্টমার কে বলেন

    " আমাকে বইল না মিস্টি ঢেকে রাখতে, মাছিকে বল যাতে মিস্টির উপর না বসে"

    তাইলে ১০০% সিওর আপনাকে কেও অন্য কিছু বলবে না, শুধু পাগল বলবে।

    এবার আপনারা বলেন এই মেয়ে টা কি?

আরেকটি বেশ জনপ্রিয় স্ট্যাটাস হল সেই একই ইংলিশ বাক্যটির প্রেক্ষিতে বিভিন্ন উন্নত এবং মুসলিম প্রধান দেশগুলর মধ্যে তুলনামূলক আলোচনা করে প্রমান করা যে কথাটি আসলে ভুল, আসলে সব দোষ মেয়েদের, তাদের পোশাকের, তাদের চলাফেরার, ধর্মীয় অনুশাসন মেনে না চলার। এইসব কথা বার্তার ফাঁকে শিক্ষিত এইসব মানুষেরা প্রকারন্তারে ধর্ষণের মত ভয়ংকর নিষ্ঠুর অপরাধকেই সমর্থন করে যাচ্ছে।

এইসব কথাবার্তা যখন শুনতে পাই, দেখতে পাই প্রচণ্ড রাগে ক্ষোভে আমার মাথা নষ্ট হয়ে যায়। শুধুমাত্র ভিন্ন শারীরিক কাঠামোর জন্য, শুধুমাত্র কতিপয় কাপুরুষ নামক জানয়ারের কুৎসিত কামনা পূরণের জন্য যখন কোন মেয়েকে এভাবে দুমড়ে মুচড়ে দেওয়া হয়, ভয়ংকরভাবে অপমানিত করা হয় তখন তার কেমন লাগে নিজে মেয়ে হিসেবে কিছুটা হলেও অনুমান করতে পারি।

মেয়েরা কি মিষ্টি, পণ্য, শুধুই ভোগের জিনিষ? মানুষ নয়? মেয়েরা কেন ছেলেদের চোখে মেয়েমানুষের পরিচয় থেকে শুধু মানুষ হয়ে উঠতে পারেনা? মেয়েদের ধর্ষণের সাথে যদি দোকানে খোলা ফেলে রাখা মিষ্টির তুলনা করা হয় তবে আমার মতে তাহলে কোন অপরাধী আসলে অপরাধী নয়, অপরাধী বলে কোন শব্দই থাকা উচিত নয়, কোন অপরাধের বিচার চাওয়া কোনভাবেই উচিত নয়। কারন প্রতিটি অপরাধের পিছনেই অপরাধীর নিজস্ব যুক্তি থেকে থাকে।

তাহলে ছিনতাইকারীকে আর কেনই বা অপরাধী বলি- এত সুন্দর মোবাইল, ক্যামেরা, ল্যাপটপ,হাতে নিয়ে সোনার গহনা পড়ে ঘুরে বেড়াব, আর এত সব লোভনীয় ক্যামেরা, ল্যাপটপ বা মোবাইল নামক মিষ্টি রাস্তা ঘাটে খোলা ঘোরাফেরা করলে মাছি তো আসবেই, মাছি তো ছিনতাই করবেই।

কাউকে সুন্দর দামী কোন মডেলের গাড়ি নামক মিষ্টি তে চড়ে ঘুরতে দেখলে তবে প্রকাশ্য জনপথে অথবা নির্জনতায় গাড়ি নামক মিষ্টি জবর দখল করা কোনই দোষের ব্যাপার নয়।

যে খুন করে তারই বা আর কি অপরাধ- এটা তো সে রুটি রুজির জন্যই করে থাকে তাইনা, এমনি এমনি তো আর খুন করছেনা, কখনও টাকার জন্য, কখনও বা প্রতিশোধের জন্য, একটা যুক্তি তো আছে।

যে ঘুষ খায়, তার অতিরিক্ত টাকার দরকার সে জন্যই খায়, তার তো আসলে কোন দোষ নাই।

আমরা ধর্ষণের সময় মেয়ে নামক মিষ্টির দোষ দিব ঢালাও ভাবে আর অন্য সময়ে, বাকি সব সময়ে অপরাধীর দোষ হবে- উঁহু, তা হবেনা। মেয়েদের যেমন নিজের স্বভাব চরিত্র পরিবর্তন করে, রেখে ঢেকে পোশাক পড়ে চলতে হবে, ঠিক সেইভাবে কোথাও কোন অপরাধ ঘটলে সব দায় দায়িত্ব তাহলে ভিক্টিমের নিতে হবে! কোথাও কোন বিচার চাওয়া যাবেনা !

প্রতিদিন খবরের কাগজ খুললেই অসংখ্য ধর্ষণের ঘটনা চোখে পড়ে যেখানে অনেক সময় মেয়েটির বয়স এতটাই কম থাকে যে তাকে আসলে শিশুই বলা যায়, তবুও আমাদের হুঁশ হয়না, তবুও আমরা ধর্ষণের পক্ষে খোঁড়া যুক্তি খুঁজি, তবুও ধর্মের দোহাই দিয়ে শালীনতার কথা বলি। এমন ধর্মের জন্য ধিক্কার, এমন মানুষদের ধিক্কার!

এত এত ঘটনা ঘটে তবুও আমরা একটুও নড়ে চড়ে বসিনা, আমাদের বিবেকে কোথাও বিঁধেনা । দিল্লীর ঘটনার পরে সেখানকার সকল শ্রেণীর সাধারন মানুষের তীব্র প্রতিক্রিয়ায় সেই দেশের সরকার , রাজনৈতিক দলগুলো, নেতা নেত্রী সবাই নড়ে চড়ে বসেছেন, ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে দেখছেন। আমরা কবে একটু নড়ে চড়ে বসব? আমাদের বিবেক কবে জাগ্রত হবে? এই সকল ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাইতে আমরা আর কবে শিখব, এমন শাস্তি যাতে করে আমাদের ভিতরে লুকিয়ে থাকা পশু পুরুষগুলোর ধর্ষণ করতে যাবার আগে যেন বুক কেঁপে উঠে শাস্তির কথা চিন্তা করে।

না তেমন কিছু লাগবে না,হাল আমলের ঘটে যাওয়া ধর্ষণের ঘটনাগুলোতে অপরাধীদের খুঁজে বের করে জনসমক্ষে শাস্তি দেওয়া হোক, সেই শাস্তি বার বার মিডিয়াগুলোতে প্রচার করা হোক, সামাজিকভাবে এইসব মানুষদের পুরোপুরি বর্জন করা হোক, আমি নিশ্চিত এইসব মানুষ নামক কাপুরুষ পশুগুলো ভয় পাবেই। রবির মায়ের সেই ঘটনায় সেই সব ধর্ষকদের পরিবার যদি তীব্র ভাবে ধর্ষকদের বর্জন করত, তা দেখে বাকিরা শিক্ষা নিত।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, যে মেয়েটি ধর্ষণের মতন এমন মর্মান্তিক ঘটনার মধ্যে দিয়ে যায়, তাদের প্রতি সমাজের নিষ্ঠুর আচরন। তাদের প্রতি আমরা বিন্দুমাত্র সহানুভুতির হাত বাড়াই না, ভালবাসায় আশ্বস্ত করিনা বরং তাদের চরিত্র নিয়ে সন্দেহ পোষণ করি। উন্নত বিশ্বেও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে থাকে, কিন্তু সেক্ষেত্রে অপরাধীর বিচার হয়। কেউ ধর্মের দোহাই দিয়ে কাগজে কলমে মেয়ের চরিত্র, মেয়ের পোশাক এইসব প্রমান করতে বসেনা। আর তাছাড়া ধর্ষণের পরে মেয়েটি স্বাভাবিক জীবনে ফিরেও আসতে পারে, যেটি কিনা আমাদের সমাজে একেবারেই অসম্ভব। মেয়েদের প্রতি সমাজের এই মানসিকতার পরিবর্তনের প্রয়োজনটাও ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।

সচেতনতার আসলে বিকল্প নেই। আমারা ধর্মের ফালতু যুক্তি বর্জন করে অপরাধকে শুধুই অপরাধ হিসেবে ঘৃণা করি এবং তার প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করি। সামাজিক সচেতনতা তৈরি করে, এলাকা ভিত্তিক প্রতিরোধ গড়ে তুলি। ধর্ষণের ব্যাপারে সবার আগে আসলে সুস্থ মানসিকতার ছেলেদের প্রতিবাদে এগিয়ে আসা উচিত। যে কোন অন্যায়ের, অত্যাচারের সময় সংখ্যাগুরুদের সক্রিয় প্রতিবাদ সংখ্যালঘুদের পাশে অবস্থান,সংখ্যালঘুদের সবসময় আশ্বস্ত করে, সাহসী করে তোলে। রবির মা বিচার পেয়েছিলেন কারন রবির বাবা সোচ্চার ছিলেন। দিল্লীর ঘটনাতে সেই সব ধর্ষকদের নিজ নিজ পরিবার থেকে বর্জন শুরু করে আইনজীবীরা পর্যন্ত তাদের পক্ষে না লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এইভাবে যদি প্রতিটি ধর্ষণের ক্ষেত্রে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হবার পরে পরিবার থেকে ধর্ষকেরা কোন ধরনের সহযোগিতা না পায়, সামাজিক প্রতি পদক্ষেপে ধর্ষকদের বর্জন করা হয় এবং কঠোর শাস্তির ব্যাবস্থা করা হয় তাহলে কারো মনের ভেতর এমন ইচ্ছে থাকলেও উবে যেতে বাধ্য।

আইনের শাসন কঠিন থেকে কঠিনতম হোক। সামাজিক সচেতনতা, ধর্ষকদের প্রতি ঘৃণা, সামাজিকভাবে ধর্ষকদের বর্জন এবং কঠোর আইনের বিধানই পারে ধর্ষণের মতন এমন ভয়ংকর, অমানবিক অপরাধের দমন করতে। ধর্ষণ নামক এই বর্বরতার, নৃশংসতার বিরুদ্ধে সকলের সম্মিলিত সুদৃঢ় অবস্থানই পারবে এই অন্যায় থেকে মুক্তি দিতে।