একটি মেয়ে ধর্ষিত হবার পর মেডিকেল টেস্টের নামে তাকে নোংরা ভাবে আবার ধর্ষন করা হয়। সে চিত্রটা যে কত ভয়াবহ হতে পারে এব কি শাস্তি হতে পারে?

পত্রিকায় এসেছে, সম্প্রতি সবুজবাগ থানার সহকারী
পুলিশ পরিদর্শক বিকাশ কুমার ঘোষ আদালতের
নির্দেশে বয়স নির্ধারণের জন্য একটি
মেয়েকে
ফরেনসিক বিভাগে আনেন।

খোলা বারান্দায় টেবিলের উপর পুরুষ ওয়ার্ডবয়
মেয়েটির কাপড় খুলতে
শুরু করলেই চিৎকার করে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে
মেয়েটি।

জ্ঞান ফেরার পর আর বয়স নির্ধারণে রাজী হননি
তিনি।

নাহ, পুলিশের দোষ নাই এখানে।
সে হুকুম এবং আবহমান কাল ধরে চলা নিয়ম ই
প্রয়োগ করেছে মেয়েটির উপর।

যা সারাদেশে ধর্ষণ, খুন, দুর্ঘটনার মামলা, বা বয়স
নির্ধারণের জন্য এই পদ্ধতিতে চেকআপ করা হয়
ভিক্টিমের।

এখানে ধর্ষিতা নারীকে দ্বিতীয়বার খোলা
পরিবেশে জনসমক্ষে ধর্ষণ করাচ্ছে রাষ্ট্র।

অবশ্যই, রাষ্ট্রইই করাচ্ছে।
অবাক করা ব্যাপার হলো, দেশের কোন
হাসপাতালেই নারীর শারীরিক চিকিৎসার জন্য পৃথক
কোন কক্ষ নাই।

চিকিৎসকের বসার কক্ষে পুরুষ চিকিৎসক পুরুষ
ওয়ার্ডবয়ের সহযোগিতায় সেই টেবিলের উপর
ধর্ষিত নারীকে রেখে তার পরিধেয় কাপড় খুলে
শারীরিক
পরীক্ষা করেন।

ধিক্কার রাষ্ট্রকে।

রাষ্ট্রের কর্তাব্যক্তিদের কন্যারা যদি ধর্ষণের
শিকার হোন, তবে কি তারা তাদের
কন্যাদের এভাবে পুরুষ চিকিৎসক এবং পুরুষ পুলিশের
হাতে সমর্পণ করবেন দ্বিতীয়বার রাষ্ট্রীয়
লেহনের জন্য???

আমার তো মনে হয় বিচার পাওয়ার আশায় দ্বিতীয়বার
এই স্বঘোষিত রাষ্ট্রীয় ধর্ষণের চেয়ে ফের
গোপণে প্রথম ধর্ষকের সাথে মিলিত হওয়া
ভালো! সেখানে তাও একজনের সাথে লজ্জার
ব্যাপার থাকে!

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, একটা ধর্ষিতা কতটুকু
ক্লিয়ার করে তথ্য দিতে পারবে একটা পুরুষ
তদন্তকারীকে? নাকি রাষ্ট্র ভাবছে ধর্ষিতা প্রথম
ধর্ষণের
সাথে সাথে লজ্জা শরম ওয়ারড্রবে রেখে
আসে তালা চাবি আটকে!
এজন্যই কিছুদিন আগে প্রধান বিচারপতি বলেছেন
দেশের ৯৯% ধর্ষণের মেডিক্যাল রিপোর্ট
ভুলে ভরা।

এটাও রিপোর্টকে প্রভাবিত করার একটা কারণ।
ধর্ষিতা হয়তো লজ্জায় সঠিক বর্ণনা দেয় না। ফলে
রিপোর্ট ও ঠিক আসেনা।
রাষ্ট্রের কি অধিকার আছে একজন নারীর
শ্লীলতাহানি করার? যেখানে সে
নারীর শ্লীলতা রক্ষায় ব্যর্থ পুরোপুরি?.
বহু ক্ষেত্রে ধর্ষণের অভিযোগ লিপিবদ্ধ
করতে গিয়ে থানার তদন্তকারী কর্মকর্তার
অশ্লীল প্রশ্নবাণে পড়েন নারী। সেই পীড়ন
কে কি আমরা যৌন নিপীড়ন বলবো

না?

আশ্চর্য হচ্ছি, এরকম একটা নোংরা অনৈসলামিক
সিস্টেম জেনেও আমাদের সুশীল শিক্ষিত সমাজ
নীরব!.

কখনো এই পদ্ধতি বদলে নারীর শ্লীলতা রক্ষার
দাবী জানানো হয়নি।
কোথায় নারী নেত্রীরা? যারা নারীর অধিকার
নিয়ে লাফায়। ইসলামকে নারীর স্বাধীনতার একমাত্র
বাধা ভাবে।

পুলিশ মানেই সবাই খারাপ তা নয়।
লাখে দুইজন চরিত্রবান অফিসার থাকতেই পারেন।

তো, এইরকম তদন্তের জন্য সেকি বিব্রত হচ্ছে
না, তার কি গোনাহ হচ্ছে না? এই অফিসারের গোনাহ্
এর পুরো দায়দায়িত্ব রাষ্ট্রের। রাষ্ট্র তাকে বাধ্য
করেছে
এটা করতে।

রাষ্ট্রের কাছে নিবেদন, নারীর নিরাপত্তা দিতে
ব্যর্থ হলেও এভাবে পুরুষ চিকিৎসক, তদন্তকারী
দিয়ে নারীকে উন্মুক্ত ময়দানে ধর্ষণ করাবেন
না।

শীঘ্রই, এসমস্ত মামলার তদন্তের জন্য নারী
চিকিৎসক এবং তদন্তকারী নিযুক্ত করুন।